মানুষের মস্তিষ্কে অতিক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে
মানুষের মস্তিষ্কে অতিক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে। চলতি বছরের শুরুতে বেশ কয়েকজন মানুষের মস্তিষ্কের টিস্যু পরীক্ষা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, আট বছর আগে মস্তিষ্কে যে পরিমাণ প্লাস্টিক কণা ছিল, বর্তমানে তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে।
ㅤ
গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেসের অধ্যাপক ম্যাথিউ ক্যাম্পেন। তিনি জানিয়েছেন, ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী মানুষের মস্তিষ্কের প্রতি গ্রাম টিস্যুতে গড়ে ৪,৮০০ মাইক্রোগ্রাম প্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে, যা মস্তিষ্কের মোট ওজনের প্রায় শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। এই প্লাস্টিক কণাগুলো ন্যানো আকারের এবং তারা ফ্যাট বা লিপিডের মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রবেশ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ㅤ
গবেষণায় দেখা গেছে, কিডনি ও যকৃতের তুলনায় মস্তিষ্কে ৭ থেকে ৩০ গুণ বেশি প্লাস্টিক কণা জমা হচ্ছে। এটি একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা, যা মানব স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, এই প্লাস্টিক কণাগুলো মস্তিষ্কের কোষের সঙ্গে কীভাবে মিথস্ক্রিয়া করে এবং সেগুলো বিষক্রিয়া ঘটায় কিনা তা নির্ধারণে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
ㅤ
প্লাস্টিকের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে এই সমস্যা বাড়ছে। প্লাস্টিকের তৈরি পণ্যের সঙ্গে প্রতিদিনের জীবনের অঙ্গ হিসেবে আমরা এত বেশি অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে, এটি আমাদের শরীরে কী ক্ষতি করছে তা আমরা পুরোপুরি বুঝতে পারি না। উদাহরণস্বরূপ, প্লাস্টিকের মোড়কে রাখা খাবার থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে, এমনকি শ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে বাতাসের সঙ্গে প্লাস্টিক কণাও আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
ㅤ
কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো সম্ভব। প্লাস্টিকের মোড়ক বা পাত্রের পরিবর্তে কাচের পাত্র ব্যবহার করা, পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ ব্যবহার করা এবং প্লাস্টিকের বোতলের পরিবর্তে ধাতব বা কাচের বোতল ব্যবহার করার মাধ্যমে আমরা নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে পারি। এছাড়াও, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
ㅤ
ㅤ
ㅤㅤ
ㅤ
ㅤㅤ
ㅤ
ㅤㅤ
ㅤ
ㅤㅤ