বাংলাদেশের ভয়াবহ বন্যায় স্বাস্থ্যরক্ষার উপায় কী?
ㅤ
বাংলাদেশের ভয়াবহ বন্যায় কবলে পড়েছে এই বন্যা মূলত ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা ঢল এবং সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণের কারণে সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, কক্সবাজার, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি খুবই সংকটময়। এই বন্যার ফলে প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পানিতে ডুবে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
ㅤㅤ
বন্যাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। ভয়াবহ বন্যায় পানি দূষিত হয়ে থাকে, যা বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। তাই, বন্যাকালীন সময়ে ও পরবর্তী সময়ে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত:
১. বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার:
- বন্যার পানি সাধারণত দূষিত থাকে, তাই শুধুমাত্র বিশুদ্ধ ও ফুটানো পানি পান করুন।
- বিশুদ্ধ পানির জন্য ট্যাবলেট বা ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে। ফুটানো পানি ১০ মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করা সবচেয়ে নিরাপদ।
২. খাদ্য নিরাপত্তা:
- খাদ্যদ্রব্য পরিষ্কার ও সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। দূষিত খাবার বা পানি থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
- পচা বা দূষিত খাদ্য এড়িয়ে চলুন এবং সঠিকভাবে রান্না করা খাবার গ্রহণ করুন।
৩. স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন ব্যবস্থা:
- বন্যার পানি দিয়ে হাত ধোয়া যাবে না। হাত ধোয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানি ও সাবান ব্যবহার করতে হবে।
- টয়লেট বা স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে।
৪. মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষা:
- বন্যার পানি জমে থাকার কারণে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেতে পারে, যা ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ ছড়াতে পারে। মশারি ব্যবহার করুন এবং মশা প্রতিরোধক স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন।
৫. সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা:
- বন্যার কারণে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তবে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তার দেখান।
৬. ত্বকের যত্ন:
- বন্যার পানিতে দাঁড়িয়ে থাকা ত্বকের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। বন্যার পানি এড়িয়ে চলা উচিত। যদি পানি স্পর্শ করতে হয়, তাহলে পরে স্যানিটাইজার বা সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন।
৭. মানসিক স্বাস্থ্য:
- বন্যার মতো দুর্যোগের সময়ে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বেড়ে যেতে পারে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, পরস্পরের পাশে থাকা, এবং প্রয়োজন হলে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করলে বন্যাকালীন ও পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।
ㅤ